Ohm's law( ওহমের সূত্র ) | some important questions related to Ohm's law

চলতড়িৎ ওহমের সূত্র সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর 



               জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর


    1. (i) ওহমের সূত্রটি বিবৃত ও ব্যাখ্যা করো। ★★★
    [ME 15, 10, 07, 04, 01]
    (ii) ওহমের সূত্র থেকে কীভাবে রোধের ধারণা এবং রোধের সংজ্ঞা পাওয়া যায় তা লেখো। ★★★[ 2+2] [ME 15, 07, 04]
    (iii) রোধের SI একক [ME 18, 13, 10, 04, 03] ও মাত্রীয় সংকেত লেখো। ★★
    [ RK Mission Boys' Home High
    Schooh Rahara 16 ]
    ওহমের সংজ্ঞা লেখো।[ 1+1+2]


    উত্তর:  

    (i) ওহমের সূত্র (Ohm's law) :
    সূত্রটি হল - উষ্ণতা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা (যেমন – যান্ত্রিক বিকৃতি, চৌম্বকক্ষেত্র, চাপ ইত্যাদি) অপরিবর্তিত থাকলে কোনো ধাতব পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা, পরিবাহীর প্রান্তীয় বিভবপার্থক্যের সমানুপাতিক হয়।

      ব্যাখ্যা :

       ধরা যাক, AB পরিবাহীর A ও B বিন্দুদ্বয়ের
    তড়িৎবিভব যথাক্রমে Va ও Vb । Va> Vb হলে পরিবাহীর মধ্য দিয়ে A বিন্দু থেকে B বিন্দু
    অভিমুখে তড়িৎপ্রবাহ চালিত হয়। তড়িৎ-
    প্রবাহমাত্রা I হলে, ওমের সূত্র অনুসারে,
     । ♾️ (VA – VB) [যখন উন্নতা ও অন্যান্য ভৌত
    অবস্থা অপরিবর্তিত]
    বা, I = K(VA – VB) [K হল সমানুপাতিক ধ্রুবক]
    :.  (VA – VB) = I/k = IR [যেখানে R = 1/K]
        (VA – VB) = V হলে,
           V = IR
    এটিই ওহম সূত্রের গাণিতিক রূপ।
    [অনুরূপ প্রশ্ন : কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদ এবং ওই পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা সম্পর্কিত সূত্রটি বিবৃত ও
    ব্যাখ্যা করো।]

    (ii) পরিবাহীর রোধের ধারণা (Concept of conductor's resistance) : 

      কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদ V এবং ওই পরিবাহীর তড়িৎ প্রবাহমাত্রা I হলে, ওহমের সূত্র থেকে আমরা পাই, V = IR 
    বা, I =V/R ; যেখানে R একটি ধ্রুবক।
     সুতরাং,  I = V/R সম্পর্কটি নির্দেশ করে, পরিবাহীর উয়তা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা
    এবং দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদ V স্থির থাকলে, R-এর মান বৃদ্ধি পেলে  ।-এর মান হ্রাস পায় এবং R-এর মান হ্রাস পেলে ।-এর মান বৃদ্ধি পায়।

    ✡️রোধের সংজ্ঞা (Definition of resistance) : ওহমের সূত্র থেকে প্রাপ্ত রোধের পরিমাণগত সংজ্ঞাটি হল উয়তা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদ এবং ওই পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবহমান তড়িৎপ্রবাহমাত্রার অনুপাতকে পরিবাহীটির রোধ বলা হয়।
    :. R = V/I
    (iii) SI একক : 
      SI-তে রোধের একক = ভোল্ট/অ্যাম্পিয়ার
                 = ওহম (♎️) [♎️→ রোধের প্রতীক]।
    ✡️ মাত্রীয় সংকেত : [R] = [M L² T-³ I-² ]।

    ✡️ ওহমের সংজ্ঞা : R = V/I সম্পর্ক নির্দেশ করে
     R = 1 যখন, V = I = 1। সুতরাং, কোনো পরিবাহীর দুই প্রান্তে 1 ভোল্ট বিভবপার্থক্য প্রযুক্ত হলে ওই পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে যদি 1 amp প্রবাহমাত্রা যায়, তবে ওই পরিবাহীর রোধকে বলা হয় 1 ওহম।

    [জানে রাখো : গাউসীয় পদ্ধতি : কার্ল ফ্রেডরিখ গাউসের নামাঙ্কিত গাউসীয় পদ্ধতি হল CGS পদ্ধতি নির্ভর তড়িৎচুম্বকীয় পরিমাপ পদ্ধতিগুলির মধ্যে সব থেকে পরিচিত পরিমাপক ব্যবস্থা। এটি গাউসীয় CGS পদ্ধতি নামেও চিহ্নিত হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে রোধের একক হল esu রোধ বা স্ট্যাট ওহম (statohm)।]


    2 . (i) ওহমের সূত্রের লেখচিত্র অঙ্কন করো। ★
    (Model Activity Task) (2)
         (ii) ওহমীয় পরিবাহী ও অওহমীয় পরিবাহী কাকে বলে? ★ (2+2)
    (govt Spons Mutttipurpose School
    (Boys'), Taki House )


    উত্তর.

     (i) ওহমের সূত্রের লেখচিত্র
      নির্দিষ্ট শর্তে কোনো পরিবাহীর প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদের পরিবর্তন X-অক্ষ বরাবর ও তার
    প্রবাহমাত্রার পরিবর্তন Y- অক্ষ বরাবর বিবেচনা করে যে লেখচিত্র পাওয়া যায়, তাকে পরিবাহীর বৈশিষ্ট্য লেখ (Characteristics curve) বলে।

    ওহ্‌মের  সূত্র থেকে প্রাপ্ত V = IR  সম্পর্কটিকে y = mx সমীকরণের সঙ্গে তুলনা করে বলা যায়, ওহমীয়
    পরিবাহী বা ওহম সূত্রের লেখচিত্র একটি মূলবিন্দুগামী সরলরেখা হয়।

    (ii) ওহমীয় পরিবাহী (Ohmic Conductor) :
      যে-সকল পরিবাহীর ক্ষেত্রে ওহমের সূত্রটি প্রবাহমাত্রা ও বিভবপ্রভেদের একটি বিস্তীর্ণ পাল্লার মধ্যে সঠিকভাবে প্রযোজ্য হয়, তাদের ওহমীয় পরিবাহী বলে। যেমন, রুপো, তামা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি বেশিরভাগ ধাতব পরিবাহী এবং অন্যান্য কিছু পদার্থ।

    ✡️ অওহমীয় পরিবাহী (Non-Ohmic Conductor) :
    যে-সকল পরিবাহী ওহমের সূত্র মান্য করে না অর্থাৎ, যাদের ক্ষেত্রে প্রবাহমাত্রা ও বিভবপ্রভেদের সম্পর্কটি অপরিবর্তিত উন্নতা ও ভৌত অবস্থায় সমানুপাতিক নয়, তাদের অওহমীয় পরিবাহী বলে। যেমন ডায়োড ভাল্ভ, ট্রায়োড, অর্ধপরিবাহী (জার্মেনিয়াম,সিলিকন ইত্যাদি), ট্রানজিস্টর, থার্মিস্টর, তড়িবিশ্লেষ্য পদার্থ (অ্যাসিড বা ক্ষারের দ্রবণ, গলিত বা জলে দ্রবীভূত খাদ্যলবণ) ইত্যাদি।

    3. (i) তড়িৎকোশের অভ্যন্তরীণ রোধ কাকে বলে? *[Dum Dum, Motijheel girls High School (HS)]
      (ii )অভ্যন্তরীণ রোধ সৃষ্টির কারণ কী?
      (iii) এটি কোন কোন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে? [Diamond Harbour Girls High
    School (HS),The Park Institution ]
    [2+1+3]


    উত্তর. 

     (i) অভ্যন্তরীণ রোধ (Internal resistance) :

     কোনো বদ্ধ বর্তনীতে তড়িৎকোশের মধ্য দিয়ে ঋণাত্মক থেকে ধনাত্মক তড়িদ্বার অভিমুখে তড়িৎপ্রবাহ চলাচল করার সময় কোশ মধ্যস্থ সক্রিয় তরল তড়িৎপ্রবাহের বিরুদ্ধে বাধা সৃষ্টি করে, এই বাধাকেই কোশের অভ্যন্তরীণ রোধ বলে।

    (ii)অভ্যন্তরীন রোধ সৃষ্টির কারণ

      তড়িৎকোশের মধ্য দিয়ে ধনাত্মক থেকে ঋণাত্মক তড়িদ্বার অভিমুখে প্রবহমান আয়নগুলির তরলের অণুগুলির সঙ্গে সংঘাতে, তড়িদ্বার অভিমুখে গতি হ্রাস পায়। এই সংঘাতই অভ্যন্তরীণ রোধ সৃষ্টির প্রধান কারণ।

    (iii)অভ্যন্তরীণ রোধ যে যে বিষয়গুলির এপর নির্ভর করে :

    (1) তড়িদ্বার দুটির মধ্যবর্তী দূরত্ব : কোশের তড়িদ্বার দুটির মধ্যে পুরুত্ব বাড়ালে অভ্যন্তরীণ রোধ বাড়ে। কারণ — এক্ষেত্রে তড়িৎপ্রবাহকে
    সক্রিয় তরলের ভিতর দিয়ে দীর্ঘতর পথ অতিক্রম করতে হয়।
    (2) সক্রিয় তরলের প্রকৃতি : কোশের সক্রিয় তরলের পরিবাহিতা যত বাড়ে, অভ্যন্তরীণ রোধ তত কম হয়।
    (3) সক্রিয় তরলে নিমজ্জিত তড়িদ্দ্বারের ক্ষেত্রফল : সক্রিয় অঞ্চলের মধ্যে তড়িদ্দ্বার দুটির নিমজ্জিত অংশের ক্ষেত্রফল বাড়ালে অভ্যন্তরীণ রোধ হ্রাস পায়।
    (4) সক্রিয় তরলের উষ্ণতা : সক্রিয় তরলের উন্নতা বেশি হলে অভ্যন্তরীণ রোধ কম হয়।

    4 (i) কোনো তড়িৎকোশের নষ্ট ভোল্ট বলতে কী
    বোঝায়? ★★ [Birbhum Zilla School ]
    (ii) তড়িৎকোশের অভ্যন্তরীণ রোধের ভূমিকা লেখো। [2+2]


    উত্তর.

    (i) নষ্ট ভোল্ট (Lost volt)

    বহিবর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ চালনারত কোনো তড়িৎকোশের তড়িৎচালক বল এবং প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদের অন্তরফল, কোশটির নিজের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ বিভবপ্রভেদের সমান
    হয়। এই অভ্যন্তরীণ বিভবপ্রভেদকেই নষ্ট ভোল্ট বলা হয়। কোশের অভ্যন্তরীণ রোধ (r) , ওই রোধের দু-প্রান্তে বিভবপ্রভেদ V' এবং
    তড়িৎকোশের সঙ্গে যুক্ত বদ্ধ বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা । হলে,
    নষ্ট ভোল্ট (V') 
    = তড়িৎপ্রবাহমাত্রা (1) × অভ্যন্তরীণ রোধ (r) 
    = ( E - Ir )

    (ii) তড়িৎকোশের অভ্যন্তরীণ রোধের ভূমিকা :

     যেহেতু,কোনো সম্পূর্ণ বর্তনীর ..
    প্রবাহমাত্রা = 
    তড়িৎচালক বল / (বাহ্যিক রোধ + অভ্যন্তরীণ রোধ)। 
    সুতরাং, কোশের দুই তড়িদ্বারের মধ্যে একটি বাহ্যিক রোধ যুক্ত করলে তার মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা কেবলমাত্র ওই বাহ্যিক রোধ এবং কোশের তড়িৎচালক বলের ওপর নির্ভর করে না, কোশটির অভ্যন্তরীণ রোধের ওপরেও অনেকাংশে নির্ভর করে। ফলে, কোনো কোশ থেকে উচ্চ মানের তড়িৎপ্রবাহ পেতে হলে ওর অভ্যন্তরীণ রোধ কম হতে হবে।


    5. (i) রোধের সমবায় কাকে বলে? এটি কয়প্রকার ও কী কী? সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো। ★
    (2+2+3)
    (ii) সমবায়ের তুল্যরোধ বলতে কী বোঝায়? ★
    (Howrah Vivekananda Institution )(2)
    (iii) শ্রেণি সমবায় ও সমান্তরাল সমবায়ের ক্ষেত্রে
    তুল্যরোধের রাশিমালা প্রতিষ্ঠা করো। ★(2+2)
    (iv) রোধের শ্রেণি সমবায় ও সমান্তরাল সমবায়ের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।(3+3)
    (v) প্রমাণ করো, শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত কয়েকটি রোধের তুল্যরোধের মান সংযুক্ত রোধগুলির মধ্যে বৃহত্তম অপেক্ষাও বৃহত্তর এবং সমান্তরাল সমবায়ের ক্ষেত্রে তুল্যরোধের মান সংযুক্ত রোধগুলির মধ্যে ক্ষুদ্রতম অপেক্ষাও ক্ষুদ্রতর।(3) 

    উত্তর.

     (i) রোধের সমবায় (Combination of resistance) :
    একই তড়িৎবর্তনীতে একাধিক রোধ সংযুক্ত করার পদ্ধতি বা কৌশলকে সাধারণভাবে রোধের সমবায় বলা হয়। একাধিক রোধ সমন্বিত তড়িৎবর্তনীর ক্ষেত্রে একই শর্তে রোধগুলির সংযোগ পদ্ধতি বা কৌশলের ওপর বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা বা বর্তনীর কার্যকারিতা বা দক্ষতা নির্ভর করে। একারণেই রোধের সমবায়ের ধারণা গুরুত্বপূর্ণ হয়।

    ✡️ রোধের সমবায় তিন প্রকার হয়।
     যথা— 1. শ্রেণি সমবায়,
               2. সমান্তরাল সমবায়
               3. মিশ্র সমবায়।

    🟣 শ্রেণি সমবায় (Series combination)
      কোনো তড়িৎবর্তনীতে একাধিক রোধ যদি এমনভাবে পরস্পর যুক্ত থাকে যে প্রতিটি রোধের মধ্য দিয়ে একই তড়িৎপ্রবাহমাত্রা যায়, তবে সেই সংযোগ পদ্ধতিকে রোধের শ্রেণি সমবায় বলে।

    (অনুরূপ প্রশ্ন : রোধের শ্রেণি সমবায় কাকে বলে?
    Ramakrishna Mission Vidyalaya, Narendrapur )

    🟣 সমান্তরাল সমবায় (Parallel combination) :
      তড়িৎবর্তনীতে একাধিক রোধ যদি এমনভাবে
    সবকটি যুক্ত থাকে যে, রোধের এক প্রান্ত উচ্চবিভব বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলি নিম্নবিভব বিন্দুতে সংযুক্ত হয় এবং এর ফলে বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহের একাধিক ভিন্ন ভিন্ন শাখা বা পথ গঠিত হয়ে থাকে, তবে ওই সংযোগ পদ্ধতিকে সমান্তরাল সমবায় বলে।

    ( অনুরূপ প্রশ্ন : রোধের সমান্তরাল সমবায় বলতে কী বোঝায়?
    Ananda Ashram Sarada Vidyapith )

    🟣 মিশ্র সমবায় (Mixed combination) :
       বর্তনীতে ব্যবহৃত তিন বা ততোধিক রোধসমূহ বর্তনীর কোনো অংশে শ্রেণি ও অপর কোনো অংশ সমান্তরাল সমবায়ে অর্থাৎ, উভয় প্রকার সমবায়ের সংযুক্ত থাকলে তাকে মিশ্র সমবায় বলে।

    (জেনে রাখো : শ্রেণি সমবায়ের প্রত্যেক রোধের মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা সমান হলেও প্রত্যেক রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ আলাদা হয়, যদি রোধগুলি অসমান হয়ে থাকে। সমান্তরাল সমবায়ের ক্ষেত্রে প্রত্যেক রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ সমান, কিন্তু তাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা ভিন্ন হয়।)

    (ii) তুল্যরোধ (Equivalent resistance) : 
      যদি কোনো বর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্যে অবস্থিত যে-কোনো রোধ সমবায়কে একটিমাত্র রোধ দ্বারা এমনভাবে প্রতিস্থাপিত করা হয়, যাতে বর্তনীর মোট তড়িৎপ্রবাহমাত্রা এবং ওই বিন্দু দুটির মধ্যে বিভবপ্রভেদ উভয়েই অপরিবর্তিত থাকে, তবে ওই রোধটিকে ওই রোধ সমবায়ের তুল্যরোধ বলা হয়।

    (iii) ➡️ শ্রেণি সমবায়
    ধরা যাক, কোনো তড়িৎবর্তনীর A ও D বিন্দুর মধ্যে R1, R2 ও R3 মানের রোধযুক্ত তিনটি রোধককে যুক্ত করে একটি শ্রেণি সমবায় গঠন করা হয়েছে। বর্তনীতে A ও D বিন্দুর মধ্যে V বিভবপ্রভেদ প্রযুক্ত হলে যদি তিনটি রোধের মধ্য দিয়ে I প্রবাহমাত্রা যায় তবে, 
       VA - VB = IR¹
       VB- VC = IR²
       VC - VD = IR³

    উপরের তিনটি সমীকরণকে যোগ করে পাই,
    VA - VD = I ( R¹ +R² +R³ )......(1)
    বর্তনীর তুল্যরোধ Rs হলে একই শর্তে অর্থাৎ, V বিভবপ্রভেদ প্রযুক্ত অবস্থায় একটিমাত্র নির্দিষ্ট A
    রোধের মধ্য দিয়ে একই মানের অর্থাৎ 
    | প্রবাহমাত্রা যদি চালিত হয় তবে, 
    VA - VD = IRs ..........(2)
    :: (1) ও (2) তুলনা করে পাই, 
        IRs = I( R¹ + R²+R³ )
    বা, Rs = R¹ + R² + R³ ।

    অর্থৎ, শ্রেণি সমবায়ে তুল্যরোধের মান ব্যবহৃত রোধকগুলির রোধের যোগফলের সমান।

          ➡️ সমান্তরাল সমবায়: 
    ধরা যাক, কোনো তড়িৎবর্তনীর A ও
    B বিন্দুর মধ্যে R1, R2 ও R3 রোধসম্পন্ন তিনটি রোধককে সমান্তরালে যুক্ত করা হয়েছে। A ও B বিন্দুর মধ্যে বিভবপ্রভেদ V হলে বর্তনীর বিভিন্ন শাখায় অর্থাৎ, R1, R2 ও R3 রোধসম্পন্ন রোধকগুলির মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা হয় যথাক্রমে 
    I¹ = V/R¹
    I² = V/R²
    I³ = V/R³

    বর্তনীর মূল প্রবাহমাত্রা,
    I = I¹ + I² + I³ 
      = V/R¹ +V/R² + V/R³
      = V(1/R¹ +1/R² +1/R³)............(1)

    বর্তনীর তুল্যরোধ Rp হলে, ব্যবহৃত নির্দিষ্ট রোধটির মধ্য দিয়ে একই প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদের
    জন্য একই মানের প্রবাহমাত্রা যায়।
    V= IRp
    বা, I = V/Rp...............(2)
    (1) ও (2) তুলনা করে পাই,
    1/Rp = 1/R¹ +1/R² +1/R³

    অর্থাৎ, সমান্তরাল সমবায়ে তুল্যরোধের মানের অন্যোন্যক, ব্যবহৃত রোধকগুলির রোধের অন্যোন্যকের যোগফলের সমান।


    (iv) 
    ✡️ রোধের শ্রেণি সমবায়ের বৈশিষ্ট্য :

    1. বর্তনীতে একটিমাত্র পথেই তড়িৎপ্রবাহ ঘটে, ফলে প্রতিটি রোধের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহমাত্রা যায়। 
    2. শ্রেণি সমবায়ে তুল্য রোধের মান ব্যবহৃত
    রোধগুলির সমষ্টির সমান। অর্থাৎ, তুল্য রোধের মান ব্যবহৃত প্রতিটি রোধের মানের চেয়ে বেশি। 
    3. প্রতিটি রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ আলাদা হয়। সমবায়ের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ, সমবায়ে সংযুক্ত রোধগুলির প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদের সমষ্টির সমান।
    4. সমবায়ের অন্তর্গত যে-কোনো রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ ওই রোধের মানের সমানুপাতিক, কারণ এক্ষেত্রে প্রবাহমাত্রা ধ্রুবক রোধ এবং সমবায়ের অন্তর্গত রোধগুলি পারস্পরিক স্থান বিনিময় করলেও প্রবাহমাত্রা বা তুল্য রোধ অপরিবর্তিত থাকে। 
    5. বর্তনীর মোট বিভবপ্রভেদ রোধগুলির মধ্যে বিভাজিত হওয়ায় এই সমবায়ে যুক্ত তড়িৎ উপকরণ বা যন্ত্রগুলি তাদের পূর্ণ সামর্থ্যসহ কাজ করতে পারে না।

    ✡️রোধের সমান্তরাল সমবায়ের বৈশিষ্ট্য : 

    1. সমান্তরাল সমবায়ে তুল্যরোধের মানের অন্যোন্যক, প্রতিটি রোধের অন্যোন্যকের সমষ্টির সমান হয়। তাই, তুল্যরোধের মান ব্যবহৃত প্রতিটি রোধের মান অপেক্ষা কম হয়। 
    2. প্রতিটি রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদের মান সমান হয়, কিন্তু প্রতিটি রোধের মধ্যে দিয়ে ভিন্ন
    পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হয়। তাই, যে-কোনো রোধের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহমাত্রা ওই রোধের ব্যস্তানুপাতিক হয়। 
    3. বর্তনীর মূল প্রবাহমাত্রা, প্রতিটি রোধের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রবাহমাত্রার সমষ্টির সমান। 
    4. রোধগুলি পারস্পরিক স্থান বিনিময় করলেও প্রতিটি রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ কিংবা সমবায়ের তুল্য রোধের কোনো পরিবর্তন হয় না।
    5. যে-কোনো রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ সমান
    হওয়ায় এই সমবায়ে যুক্ত তড়িৎ উপকরণ বা যন্ত্রগুলি তাদের পূর্ণ সামর্থ্য নিয়ে কাজ করতে পারে।

    (V) ধরা যাক, R¹ ও R² মানের দুটি রোধ
     (R¹> R²) সংযুক্ত করে তড়িৎবর্তনী গঠন করা হয়েছে। রোধ দুটিকে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করা হলে তুল্যরোধ, Rs = (R¹ + R²) অর্থাৎ, Rs > R¹
    :. শ্রেণি সমবায়ে তুল্যরোধের মান, সংযুক্ত রোধ দুটির মধ্যে বৃহত্তম রোধ অপেক্ষাও বৃহত্তর।
    .".এবার, রোধ দুটিকে সমান্তরালে যুক্ত করা হলে তুল্যরোধ যদি Rp হয়, তবে
    1/Rp = 1/R¹ + 1/R²
    বা, Rp = R¹R²/(R¹+R²)
    রোধের মান কখনো ঋণাত্মক হয় না, সুতরাং, R²/R¹ একটি ধনাত্মক ভগ্নাংশ অর্থাৎ, 
    (1+R²/R¹) >1, Rp <R² ।
    সমান্তরাল সমবায়ে তুল্যরোধের মান, সংযুক্ত রোধগুলির মধ্যে ক্ষুদ্রতম রোধ অপেক্ষাও ক্ষুদ্রতর।


    6. (i) কোনো তড়িৎকোশের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ তার তড়িৎচালক বলের সমান হতে পারে কি?★★ (Haldia govt Spons Vivekananda Vidyabhawan (HS))
        (ii) তড়িৎচালক বলের মান কোশের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ অপেক্ষা কম হতে পারে কি? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো। ★★( Midnapore Collegiate School)


    উত্তর
              (i) তড়িৎকোশের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ, 
    V = E – Ir, যেখানে চিহ্নগুলি প্রচলিত অর্থযুক্ত, স্পষ্টতই দুটি শর্তে V = E হয় –
    (1) যখন r = 0 অর্থাৎ, কোশের অভ্যন্তরীণ রোধ শূন্য হলে, যা বাস্তবে অসম্ভব। 
    (2) I = 0 অর্থাৎ, কোশের মধ্য দিয়ে চালিত
    প্রবাহমাত্রা যদি শূন্য হয়। পোটেনশিওমিটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বর্তনীতে একমাত্র সেটি নির্ণয় করা সম্ভব।

             (ii) V = E-Ir ব্যবহার করে পাই, ।-এর অভিমুখ বিপরীত হলে অর্থাৎ, I-এর স্থলে (– I) লেখা হলে, V = E-(-1)r= E+ Ir । 
    সুতরাং, কোশের স্বাভাবিক প্রবাহ চালনার অভিমুখের বিপরীতে কোশের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পাঠানো হলে V> E হয়। বাহ্যিক
    তড়িৎ উৎস দ্বারা সঞ্চয়ক কোশের আহিতকরণের (charging) সময় এমন ঘটনা ঘটে। 


    7. ‘নষ্ট ভোল্ট'— এরূপ নামকরণের কারণ লেখো। ★★ (2)


    উত্তর.

    E = IR + Ir সম্পর্ক নির্দেশ করে যে, সংযোজী তারগুলির রোধ উপেক্ষণীয় হলে IR পদটি কোশের দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদের সমান। অর্থাৎ, বলা যায় যে, কোনো কোশে। তড়িৎপ্রবাহ গেলে তার দুই প্রান্তের বিভবপ্রভেদ হ্রাস পায়।
     E – IR = Ir । এই বিভব হ্রাসের মানই হল নষ্ট ভোল্টের পরিমাপ। কোশের অভ্যন্তরীণ রোধের জন্য কোশের অভ্যন্তরেই এই পরিমাণ বিভবের অপচয় ঘটে। ফলে, কোশটির সমগ্র তড়িৎচালক বল বহিবর্তনীতে বিভবপ্রভেদ হিসেবে পাওয়া যায় না। সংহত বর্তনীতে বহিবর্তনীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করার প্রয়োজনে কোশের তড়িৎচালক বলের এই অংশ কোনো কাজে না লাগায় একে ‘নষ্ট ভোল্ট’ বলে
    অভিহিত করা হয়।


     8. উষ্ণতা ও প্রস্থচ্ছেদ অপরিবর্তিত রেখে একটি তামার তারের দৈর্ঘ্য 1% বৃদ্ধি করা হলে তার রোধের কী পরিবর্তন ঘটবে? (2)


    উত্তর.

     পরিবাহী তারের রোধ তার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক। অর্থাৎ, R ♾️ l [ যখন, প্রস্থচ্ছেদ ও উন্নতা ধ্রুবক ]। সুতরাং, দৈর্ঘ্য 1% বৃদ্ধি
    পেলে, একই শর্তে, তারের রোধও 1% বৃদ্ধি পাবে।
    [অনুরূপ প্রশ্ন : ব্যাস ও উন্নতা অপরিবর্তিত রেখে একটি ধাতব তারের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ করা হলে, তারটির রোধের কীরূপ পরিবর্তন হবে?]


    9. রুপোর রোধাঙ্ক 1.66 x 10-⁶ ♎️.cm বলতে কী বোঝায়?
    (Sarisha Ramakrishna Mission Saradamandir )

    উত্তর

     বিবৃতিটির অর্থ হল, নির্দিষ্ট উন্নতায় 1cm বাহুবিশিষ্ট একটি রুপোর তৈরি ঘনকের দুই বিপরীত তলের মধ্যে উৎপন্ন রোধে
    পরিমাণ হবে 1.66 x 10-⁶ ♎️।


    10. সাধারণ তড়িৎবর্তনীতে সংযোজী তারগুলির রোধ বিবেচনা করা হয় না কেন?

    উত্তর.

     গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক যন্ত্র বা তড়িৎবর্তনীতে সংযোজী উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত পরিবাহী তারগুলির রোধ বিবেচনা করা হয় না, কারণ – ব্যবহৃত তড়িত্যন্ত্র বা উপকরণগুলির তুলনায়
    এদের রোধ খুব কম হয়। 


    11. দুটি 10 ওহম রোধকে কীভাবে যুক্ত করলে 5 ওহম রোধ পাওয়া যাবে? ★★
    [ME 20] (2)

    উত্তর

    10 ওহম রোধ দুটিকে সমান্তরালে যুক্ত করলে তুল্যরোধ হয়
    Rp= (10x10)/(10+10)
         = 100/20
         = 5 ♎️
    সুতরাং, রোধ দুটিকে সমান্তরালে যুক্ত করলে 5♎️ মানের রোধ গঠন করা যাবে।


    12. কয়েকটি রোধ একটি বর্তনীতে শ্রেণি অথবা সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত আছে। শুধু দেখেই কীভাবে বুঝবে তারা কোন্ সমবায়ে যুক্ত আছে? ★★ [ME ] (2)


    উত্তর

     দুটি ভিন্ন উপায়ে এই শনাক্তকরণ করা সম্ভব – 
    (1) বর্তনী রোধগুলি পরপর প্রান্তীয়ভাবে যুক্ত থাকলে সেটি শ্রেণি সমবায় এবং যদি সমস্ত রোধের একটি প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং
    রোধগুলির অপর প্রান্ত অপর এক সাধারণ বিন্দুতে যুক্ত থাকে, তাহলে সেটি হল সমান্তরাল সমবায়।
    (2) বর্তনীতে সংযুক্ত বাতিগুলির ঔজ্জ্বল্য দেখে সমবায় দুটিকে চিহ্নিত করা যাষয়। যেক্ষেত্রে বাতিগুলির ঔজ্জ্বল্য কম হবে সেটি শ্রেণি এবং যেক্ষেত্রে ঔজ্জ্বল্য বেশি, সেটি সমান্তরাল সমবায়।


    13 (i) পরিবাহীর রোধ কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ? ★★ [ME 14, 08, 05, 03] পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন (3)
    (ii) পরিবাহীর রোধাঙ্ক পরিবাহিতা ও পরিবাহিতাঙ্কের সংজ্ঞা দাও। এদের মাত্রীয় সংকেত ও একক লেখো। ★★ ★★★ [ME 06, 03],Jodhpur Park girls' High School
    (2+2+2)
    (iii) রোধের উষ্ণতা গুণাঙ্ক বলতে কী বোঝায়?   কোন্ জাতীয় উপাদানের ক্ষেত্রে এর মান ধনাত্মক ও ঋণাত্মক হয়? ★★(Hindu School)(2+2)


    উত্তর .

    (i) পরিবাহীর রোধ প্রদত্ত বিষয়গুলির ওপর নির্ভর করে---
            1. দৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভরতা :
       প্রস্থচ্ছেদ, উয়তা, উপাদান এবং অন্যান্য ভৌত শর্ত অপরিবর্তিত থাকলে কোনো পরিবাহীর রোধ তার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক হয়। অর্থাৎ, কোনো পরিবাহী তার যত দীর্ঘ হবে, সেটির রোধও তত বেশি হবে। পরিবাহীর দৈর্ঘ্য ৪ এবং রোধ R হলে লেখা যায়, 
          R ♾️ l --------- (1)

          2. প্রস্থচ্ছেদের ওপর নির্ভরতা :
     দৈর্ঘ্য, উয়তা, উপাদান এবং অন্যান্য ভৌত শর্ত অপরিবর্তিত থাকলে কোনো পরিবাহীর রোধ
    তার প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক হয়।
    অর্থাৎ, R ♾️ 1/A .......(2)
      সুতরাং, পরিবাহীর প্রস্থচ্ছেদ বাড়লে রোধ কমে এবং প্রস্থচ্ছেদ কমলে রোধ বাড়ে।

           3. উপাদানের ওপর নির্ভরতা :
      পরিবাহীর উয়তা, দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদ এবং অন্যান্য ভৌত শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকলে পদার্থের উপাদানভেদে রোধ ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন— তামা, রুপো, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি ধাতুর রোধ খুবই কম কিন্তু রবার, কাঠ, প্লাস্টিক ইত্যাদি অধাতব পদার্থের রোধ খুব বেশি।

            4. উন্নতার ওপর নির্ভরতা :
     পরিবাহীর রোধ তার উয়তার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ধাতব পরিবাহীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে
    রোধ বৃদ্ধি পায় এবং উয়তা কমলে রোধ কমে যায়। অবশ্য কার্বন, তড়িবিশ্লেষ্য পদার্থ, অর্ধপরিবাহী ইত্যাদি পদার্থের ক্ষেত্রে উন্নতা
    বাড়লে রোধ কমে। তবে ম্যাঙ্গানিন, ইনভার, কনস্ট্যানটান প্রভৃতি সংকর ধাতুর রোধ উয়তার হ্রাস-বৃদ্ধিতে প্রায় একই থাকে।

            5. আলোর ওপর নির্ভরতা :
      বিশেষ কিছু ধাতু ও অর্ধপরিবাহী
    পদার্থের ওপর আলো পড়লে রোধের মান পরিবর্তিত হয়। যেমন- সেলেনিয়াম (Se) ধাতুর ওপর আলো পড়লে তার রোধ কমে যায়।
    আলোর তীব্রতা যত বাড়ে, ওর রোধও তত কমে।

            6. চাপের ওপর নির্ভরতা :
        চাপ বৃদ্ধিতে বেশিরভাগ ধাতুর রোধ হ্রাস পায়। কার্বন গুঁড়োর ওপর চাপ বাড়ালে তার রোধ কমে যায়, আবার চাপ কমালে রোধ বাড়ে।

            7. চৌম্বকক্ষেত্রের ওপর নির্ভরতা :
       বিশেষ কিছু ধাতু যেমন বিসমাথ (Bi) ধাতুকে উচ্চ প্রাবল্যের চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে রোধ বেড়ে যায়। চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য যত বাড়ে, বিসমাথের রোধও তত বেড়ে যায়।

    (ii) 🟣 রোধাঙ্ক (Resistivity) : 

             দৈর্ঘ্য ও A প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর রোধ R হলে, আমরা জানি,
                  R ♾️ l/A
             বা, R = pl /A
    যেখানে, p (row) হল সমানুপাতিক ধ্রুবক, যাকে পরিবাহীটির উপাদানের রোধাঙ্ক বা আপেক্ষিক রোধ বলা হয়।
    সুতরাং, উপরোক্ত সমীকরণ থেকে লেখা যায়, 
         p = RA / l
    এক্ষেত্রে, l = 1 ও A = 1 হলে p = R হয়।
    অর্থাৎ, 
          রোধাঙ্কের সংজ্ঞাটি হয় নিম্নরূপ :
                  স্থির উষ্ণতায় একক দৈর্ঘ্য এবং একক প্রস্থচ্ছেদবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর দুই বিপরীত পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী অংশের রোধকে ওই পরিবাহীর উপাদানের রোধাঙ্ক বলে।


          🟣 পরিবাহিতা (Conductance) :
       কোনো পরিবাহীর রোধের অন্যোন্যককে ওই পরিবাহীর পরিবাহিতা বলে। সুতরাং, পরিবাহিতা দ্বারা কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ কত সহজে চলাচল করতে পারে তার পরিমাপ করা হয় এবং এটি হল রোধের বিপরীত বৈশিষ্ট্য। সুতরাং, 
    পরিবাহিতা (K) = 1 / R

    [জেনে রাখা : রোধের মতো পরিবাহিতাও উয়তা ও অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে স্থির থাকে এবং এর মান পরিবাহীর দৈর্ঘ্য,
    প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল ও উপাদানের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে।]

        🟣 পরিবাহিতাঙ্ক (Conductivity) :
       কোনো পদার্থের রোধাঙ্কের অন্যোন্যককে বলা হয় পদার্থটির পরিবাহিতাঙ্ক।
    অর্থাৎ,
      তড়িৎ পরিবাহিতাঙ্ক (➰️) = 1 /p

    রোধাঙ্কের মাত্রীয় সংকেত : 
              R = pl / A
           বা, p = RA / l
    রোধাঙ্ক [p] = [M L³ T-³ l-² ]।
     SI একক : রোধাঙ্কের SI-তে একক ওহম-মিটার (♎️·m)।
     CGS একক : রোধাঙ্কের CGS পদ্ধতিতে একক
    স্ট্যাট ওহম সেন্টিমিটার (Stat ohm-cm)।

       🟣পরিবাহিতার মাত্রীয় সংকেত :
              [M-¹ L-² T³ I²]।
        SI একক : SI-তে পরিবাহিতার একক
     mho (♎️-¹/♈️) বা সিমেন্স।

        🟣 পরিবাহিতাঙ্কের মাত্রীয় সংকেত :
    [➰️] = [ 1/p] = [M-¹ L-³ T³ I² ]
    SI একক : মো / মি [mho/m] বা ♈️.m-1
     বা S.m-¹।


       (iii)রোধের উষ্ণতা গুণাঙ্ক 
    (Temperature coefficient of resistance) :
        প্রতি 1°C উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য কোনো পরিবাহীর প্রতি একক রোধের যে পরিমাণ রোধ বৃদ্ধি হয়, তাকেই ওই পরিবাহীর উপাদানের রোধের উন্নতা গুণাঙ্ক বলা হয়। 0°C ও t°C
    উন্নতায় পরিবাহীর রোধ যথাক্রমে Ro ও Rt হলে, সংজ্ঞানুসারে উষ্ণতা গুণাঙ্ক (alpha) :
     = (Rt - Ro)/ Ro.t
    বা, Rt = Ro (1 + alpha.t)

          🔘 যে-কোনো পরিবাহীর ক্ষেত্রে, উয়তা বৃদ্ধির মাঝারি পাল্লায় alpha-এর মান মোটামুটি ধ্রুবক থাকে। ধাতব পরিবাহীর ক্ষেত্রে, উয়তা
    বৃদ্ধিতে alpha-এর মান ধনাত্মক। আবার কার্বন, ভালক্যানাইজড ইন্ডিয়ান রবার, অর্ধপরিবাহী, তড়িবিশ্লেষ্য পদার্থ ইত্যাদির ক্ষেত্রে
    উয়তা বৃদ্ধিতে alpha-এর মান হ্রাস পায়। তাই, এজাতীয় পদার্থের ক্ষেত্রে alpha ঋণাত্মক রাশি।

    [জেনে রাখো : জ্বলন্ত অবস্থায় কার্বন ফিলামেন্ট বাতির রোধ, শীতল অবস্থায় রোধের মানের প্রায় অর্ধেক হয়। 0°C উয়তায় ভালক্যানাইজড ইন্ডিয়ান রবারের রোধ যা হয়, 24°C উয়তায় তা প্রায় কমে ¼ অংশ হয়। অর্ধপরিবাহী উপাদানের ক্ষেত্রে a-এর মানের ক্রম হয় প্রায় 
    – 6 x 10-² /°C .
    ধাতুদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় অর্ধপরিবাহীর দশ ভাগের 1 ভাগ হয়।
    Rt = Ro.(1 + alpha.t) সম্পর্কটি ক্যালেন্ডার সূত্র নামে পরিচিত।]


    14. উদাহরণসহ পরিবাহী, অন্তরক, অর্ধপরিবাহী ও অতিপরিবাহী পদার্থের সংজ্ঞা দাও। (1x4)
    (ii) প্রত্যেকটির দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো। (3)
    (iii) উন্নতার সঙ্গে পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী এবং অতিপরিবাহী পদার্থের রোধাঙ্কের পরিবর্তন কেমন হয়, লেখচিত্রের সাহায্যে
    দেখাও এবং ব্যাখ্যা করো। ★★ (2x3)


    উত্তর

     (i) পরিবাহী (Conductor) : 
        যে-সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ সহজে প্রবাহিত হয়, তাদের তড়িতের পরিবাহী অথবা
    সুপরিবাহী পদার্থ বলা হয়।
    উদাহরণ : প্রায় সমস্ত ধাতু, যেমন – রুপো, তামা,
    অ্যালুমিনিয়াম; অধাতুদের মধ্যে গ্রাফাইট, গ্যাস কার্বন ইত্যাদি তড়িতের সুপরিবাহী পদার্থ।

    (ii)কুপরিবাহী (Bad conductor)
       যে-সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা নগণ্য অর্থাৎ, যাদের মধ্য দিয়ে তড়িৎ পরিবহণ প্রায় হয় না বললেই চলে, তাদের কুপরিবাহী বা অন্তরক বলে।
    উদাহরণ : প্রায় বেশিরভাগ অধাতু, শুষ্ক বায়ু, বিশুদ্ধ জল ইত্যাদি তড়িতের কুপরিবাহী পদার্থ।

    (iii) অর্ধপরিবাহী (Semiconductor) :
        ঘরের উন্নতায় (27°C বা 30°C) যে-সকল পদার্থ আদর্শ অন্তরক পদার্থ হিসেবে আচরণ করে, কিন্তু সামান্য বর্ধিত উন্নতায় যাদের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, তাদের অর্ধপরিবাহী বলে।
    উদাহরণ : বিশুদ্ধ সিলিকন, জার্মেনিয়াম বা তাদের সমধর্মী আচরণ দেখায় এমন যৌগ, যেমন গ্যালিয়াম আর্সেনাইড, ইন্ডিয়াম সালফাইড ইত্যাদি অর্ধপরিবাহী পদার্থ।

    (iv) অতিপরিবাহী (Superconductor) :
        উষ্ণতা কমলে বেশিরভাগ ধাতুর রোধ সুষমভাবে কমে, কিন্তু বিশেষ কিছু ধাতুর ক্ষেত্রে দেখা যায়, উয়তা হ্রাস পেয়ে পরমশূন্যের কাছাকাছি পৌঁছোলে এদের রোধ হঠাৎ শূন্য অর্থাৎ, তড়িৎ পরিবাহিতা প্রায় অসীম হয়ে যায়। এই বিশেষ যায়। এই বিশেষ ধর্মকে অতিপরিবাহিতা (Superconductivity) এবং সংশ্লিষ্ট ধাতুগুলিকে ওই বিশেষ উষ্ণতায় অতিপরিবাহী বলে।
    উদাহরণ : পারদ (প্রায় 4.2K উয়তায়), সিসা (7.2K অপেক্ষা কম উয়তায়), নাইওবিয়াম (Nb) (9.2K অপেক্ষা কম উন্নতায়) ইত্যাদি পদার্থ অতিপরিবাহিতা দেখায়।

    [জেনে রাখা : সংকট উন্নতা (Tc) নামে পরিচিত একটি বিশেষ উন্নতা অপেক্ষা কম উয়তায় বিশেষ কিছু ধাতু বা ধাতুসংকর অতিপরিবাহিতা
    প্রদর্শন করে। 1911 খ্রিস্টাব্দে ডাচ বিজ্ঞানী ক্যামারলিং ওনস্ প্রথম এই ঘটনা আবিষ্কার করেন এবং দেখান 4.2K উন্নতার নীচে পারদ
    অতিপরিবাহিতা দেখায়। 1986 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বেডনর্জ ও মুলারের দ্বারা আবিষ্কৃত ইট্রিয়াম নির্ভর কিউপ্রেট পেরভস্কাইট (Ytrium based cuprate pervoskite) যৌগ প্রায় 92K উন্নতায় অতিপরিবাহিতা দেখায়।]


    (ii) দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহারিক প্রয়োগ :

       🟣 পরিবাহী :
         1. তামা ও অ্যালুমিনিয়াম বৈদ্যুতিক তার হিসেবে তড়িৎবর্তনীতে; 
        2. তড়িৎচুম্বক, আর্মেচার বা কুণ্ডলী, কমিউটেটর ইত্যাদি বৈদ্যুতিক ও বৈদ্যুতিন যন্ত্রে বা যন্ত্রাংশে;
       3. অধাতব পরিবাহী হিসেবে গ্রাফাইট ও গ্যাস কার্বনকে তড়িৎদ্বার রূপে 
      4. ডায়নামো বা জেনারেটরের ব্রাশ রূপে এটি ব্যবহৃত হয়।

      🟣 অন্তরক
       1. বৈদ্যুতিক তারের আবরক রূপে রবার, পলিথিন ও রেশমের সুতো অন্তরক হিসাবে ব্যবহৃত হয়; 
       2. বৈদ্যুতিক তার খাটানোর কাজে পোর্সেলিন-এর বাটি এবং শুকনো কাঠ, প্লাস্টিক ইত্যাদি অন্তরক পদার্থ; 
      3. ট্রেনের ওভারহেড তারে সেরামিক,
    বেকেলাইট সুইচ ও সুইচবোর্ড, প্লায়ার্স, টেস্টার ইত্যাদির হাতল, নির্মাণে অন্তরক পদার্থ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

      🟣 অর্ধপরিবাহী
       1. ডায়োড ভোল্টেজ একমুখীকরণের কাজে;
       2. ভোল্টেজ ও প্রবাহমাত্রা বিবর্ধক হিসেবে ট্রানজিস্টর, ভোল্টেজ সুস্থিতিকারক হিসেবে জেনার ডায়োডে; 
      3. বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন যন্ত্র ও সরঞ্জামে, কম্পিউটার, টিভি ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।

      🟣 অতিপরিবাহী
       1. সুপারফাস্ট ট্রেন (Maglev) নির্মাণে; 
       2. MRI মেশিনে; 
       3. উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গণকযন্ত্র বা সুপার
    কম্পিউটার নির্মাণে; 
      4. লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার (LHC) যন্ত্রে;
      5. সুপারকন্ডাক্টিং তড়িৎচুম্বক নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

    (iii) লেখচিত্রের সাহায্যে উন্নতার সঙ্গে পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী এবং অতিপরিবাহী পদার্থের রোধাঙ্কের পরিবর্তন : 

      উষ্ণতা বৃদ্ধিতে প্রায় সমস্ত পরিবাহীর রোধাঙ্কই বৃদ্ধি পায়। বেশিরভাগ ধাতুর ক্ষেত্রে উন্নতা বৃদ্ধিতে রোধাঙ্কের বৃদ্ধি রৈখিকভাবে হয়। লেখচিত্র (a) ও (b) থেকে স্পষ্ট যে, পরম শূন্য উন্নতায় বিশুদ্ধ ধাতুর রোধাঙ্ক প্রায় শূন্য হলেও সংকর ধাতুর (যেমন— নাইক্রোম) ক্ষেত্রে
    কিছু পরিমাণ অবশিষ্ট রোধাঙ্ক পাওয়া যায়, যা দিয়ে ধাতু ও ধাতু সংকরের পার্থক্য নিরূপণ করা যায়।

    চিত্র (c) থেকে পাওয়া যায়, অর্ধপরিবাহী পদার্থের ক্ষেত্রে উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে রোধাঙ্কের মান দ্রুত হ্রাস পায়। অন্তরক পদার্থের ক্ষেত্রেও উয়তা-রোধাঙ্ক সম্পর্ক অর্ধপরিবাহীর অনুরূপ হয়।

    উয়তা হ্রাস পেলে পারদের রোধাঙ্ক রৈখিকভাবে হ্রাস পেলেও 4.2K উয়তার নীচে পারদের রোধাঙ্ক 0.10♎️ থেকে হঠাৎ শূন্যে নেমে আসে। সুতরাং, পারদ 4.2K উয়তার নীচে অতিপরিবাহিতা দেখায়। বলাবাহুল্য, এক্ষেত্রে সংকট উন্নতা (T) হল 4.2K। অন্যান্য অতিপরিবাহী ধাতু বা ধাতু সংকরের আচরণ একইরকম হয়ে থাকে।


    15. একটি কোশের দুই মেরুকে শর্ট সার্কিট করলে দেখাও যে, কোশের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ শূন্য হয়। অথবা, শর্ট সার্কিট এর সময় বিভবপ্রভেদ শূন্য হয় কেন?


    উত্তর

    শর্ট সার্কিট হওয়া অবস্থায় বা এরূপ বর্তনীর ক্ষেত্রে বহিবর্তনীর রোধ, R = 0 হয়। কারণ— এইসময় প্রবাহমাত্রা সরাসরি ধনাত্মক মেরু থেকে ঋণাত্মক মেরু অভিমুখে যায়। ফলে,
    বহিবর্তনী এই অবস্থায় রোধহীন হয়। সুতরাং, কোশের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ = বহিবর্তনীর বিভবপ্রভেদ = I x R = I x 0 = 0 .
    এক্ষেত্রে কোশের তড়িৎচালক বলের সম্পূর্ণটাই নষ্ট ভোল্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।


    16. রোধ ও রোধাঙ্কের মধ্যে কোন্‌টি অধিকতর মৌলিক ব্যাখ্যা করো। ★★ (1+2)


    উত্তর .

       রোধ এবং রোধাঙ্কের মধ্যে রোধাঙ্ক অধিকতর মৌলিক। নির্দিষ্ট উষ্ণতায় কোনো পরিবাহীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদ পরিবর্তিত হলে পরিবাহীর রোধও পরিবর্তিত হয়, কিন্তু পরিবাহীটির উপাদানের রোধাঙ্কের কোনো পরিবর্তন হয় না। কারণ – রোধাঙ্ক নির্ভর করে পরিবাহীর উপাদান ও উয়তার ওপর; পরিবাহীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থচ্ছেদ বা জ্যামিতিক আকারের ওপর নয়। এজন্য রোধ ও রোধাঙ্কের মধ্যে রোধাঙ্ক অধিকতর মৌলিক।


    17. ওহমীয় পরিবাহী (Ohmic conductor) ও অওহমীয় পরিবাহী (Non-Ohmic conductor)-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

     উত্তর .


    18. রোধ (Resistance) ও রোধাঙ্ক (Resistivity)-এমধ্যে পার্থক্য লেখো। ★★

     উত্তর.




















    No comments

    ALL ABTA TEST PAPER 2023-24 PAGES SOLUTIONS at free of cost.

    MADHYAMIK ABTA 24 LIFE SCIENCE PAGE 141 | MADHYAMIK ABTA TEST PAPER SOLUTION 24 |

                            MADHYAMIK                 ABTA TEST PAPER 23-24                LIFE SCIENCE PAGE 141                          SOLUTION 

    Powered by Blogger.