মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগের গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর /100% কমোন যগ্য
বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ( Heredity and Some Common Genetic Diseases)
_____________________________
Topic : 7
_____________________________
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর (SAQ)
1. হিমোফিলিয়ার উত্তরাধিকার কীভাবে ঘটে তা ব্যাখ্যা করো। কখন কন্যা-সন্তানের হিমোফিলিয়া হবে?
ANS:
হিমোফিলিয়ার উত্তরাধিকার (Inheritance) :
হিমোফিলিয়া আক্রান্ত পুরুষ বা মহিলা 20 বছরের মধ্যে রক্তক্ষরণের ফলেমারা যায়। এই কারণে স্বাভাবিক পুরুষ ও হিমোফিলিয়া আক্রান্ত মহিলা এবং হিমোফিলিয়া আক্রান্ত পুরুষ ও স্বাভাবিক মহিলার মধ্যে বিবাহ হওয়া সম্ভব নয়। কেবল স্বাভাবিক (বাহক) মহিলা ও স্বাভাবিক পুরুষের মধ্যে বিবাহ
হতে পারে। এক্ষেত্রেও 50% পুত্রসন্তান ভহিমোফিলিয়া আক্রান্ত হতে পারে।
নীচে প্যানেট স্কোয়ারের (punnet square) সাহায্যে হিমোফিলিয়ার উত্তরাধিকার দেখানো হল—
> কন্যা সন্তানের হিমোফিলিয়া : বাহক মাতা এবং হিমোফিলিক পিতার বিবাহ হলে কন্যা সন্তান হিমোফিলিক হতে পারে। নীচে ঘটনাটিকে প্যানেট স্কোয়ারের সাহায্যে দেখানো হল-
2. মানুষের পুজেশনের একই অঙ্গ সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। এরকম তোমার জানা দুটি বৈশিষ্ট্যের নাম লেখো।
ANS.
মানুষের পপুলেশনের একই অঙ্গ সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। এমন দুটি বৈশিষ্ট্য হল—
(i) কানের মুক্ত লতি ও যুক্ত লতি।
(ii) রোলার জিভ ও স্বাভাবিক জিভ।
3. তোমার দেখা একটি পরিবারে বাবা ও মা দুজনেই স্বাভাবিক, কিন্তু তাদের এক ছেলে হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এই ঘটনাটি কীভাবে সম্ভব একটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো।
ANS. ওই সন্তানের মাতা স্বাভাবিক কিন্তু হিমোফিলিয়ার বাহক এবং বাবা স্বাভাবিক
তাই তাদের ছেলে হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। নীচে চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখানো হল-
সিদ্ধান্ত : কন্যাদের 50% স্বাভাবিক, 50% বাহক এবং পুত্রদের 50% স্বাভাবিক ও 50% হিমোফিলিক।
4. দু-জন স্বাভাবিক বাবা-মায়ের সন্তান কীভাবে থ্যালাসেমিক হতে পারে তা একটি ক্রসের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো। মেন্ডেল তার পরীক্ষার জন্য মটর গাছ নির্বাচন করেছিলেন কেন?
ANS. থ্যালাসেমিয়া রোগটি যেহেতু একটি অটোজোমবাহিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ, তাই বাবা-মা উভয়ই স্বাভাবিক কিন্তু বাহক হতে পারেন। যদি উভয়ই স্বাভাবিক কিন্তু বাহক হন তবে তাদের সন্তান-সন্ততি থ্যালাসেমিক হতে পারে আবার নাও হতে পারে। নীচে ছকের সাহায্যে দেখানো হল—
● সিদ্ধান্ত : উৎপন্ন অপত্যের 25% সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, 50% স্বাভাবিক কিন্তু বাহক, 25% থ্যালাসেমিক।
5. অটোজোম বাহিত বংশগত রোগ ও সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত বংশগত রোগের মধ্যে পার্থক্য :
6. থ্যালাসেমিয়া ও হিমোফিলিয়া রোগের মধ্যে পার্থক্য লেখো:
7. হিমোফিলিয়া A ও হিমোফিলিয়া B-এর পার্থক্য :
8. সমাজ থেকে তোমার জানা একটি জিনগত রোগের বিস্তার রোধ করতে বিয়ের আগে হবু দম্পতিকে কী কী পরামর্শ দেও যেতে পারে, সে বিষয়ে তোমার মতামত জানাও।
অথবা, বিবাহের পূর্বে জেনেটিক কাউন্সেলিং গুরুত্বপূর্ণ কেন?
অথবা, জেনেটিক কাউন্সেলিং কীভাবে সামাজিক সমস কমাতে পারে তা বিচার করো।
অথবা, বিবাহের পূর্বে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা বাঞ্ছনীয় কেন?
অথবা, একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রোধ জেনেটিক কাউন্সেলিং-এর সময় তুমি কোন্ কোন্ বিষয়ে খোঁজ নেবে?
অথবা,জিনগত রোগের প্রসার রোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং-এই ভূমিকা আলোচনা করো।
ANS: সমাজ থেকে জিনগত রোগ থ্যালাসেমিয়ার বিস্তার রোধ করতে
বিয়ের আগে হবু দম্পতিকে নিম্নলিখিত পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। তাঁদের জেনেটিক কাউন্সেলিং করে জানতে হবে তাঁরা স্বাভাবিক, বাহক অথবা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কিনা। যদি তাঁরা উভয়ই বাহক বা একজন আক্রান্ত অপরজন বাহক বা উভয়ই আক্রান্ত হন তবে তাদের বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা দিতে হবে। উভয়ই বাহক হলে বা আক্রান্ত হলে তাঁদের সন্তান-সন্ততিরা থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। সে বিষয়ে তাঁদের অবগত করাতে হবে। যদি তাঁরা একান্তই বিবাহ করতে চান তবে তাঁরা যেন সন্তান-সন্ততি না নেন তার পরামর্শ দিতে হবে।
9. একজন বর্ণান্ধ রোগের বাহক একজন মহিলা, একজন বর্ণান্ধ পুরুষকে বিবাহ করল। তাদের একটি কন্যাসন্তান হল। এই কন্যাসন্তানটির বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কতটা তা বিশ্লেষণ করে
লেখো।
ANS. যেহেতু মা বর্ণান্ধ রোগের বাহক তাই একটি X ক্রোমোজোম আক্রান্ত ও অপর X ক্রোমোজোমটি আক্রান্ত হবে। এবং বাবার X ক্রোমোজোম আক্রান্ত হবে। যেহেতু কন্যার কাছে একটি X ক্রোমোজোম বাবা থেকে অপর X ক্রোমোজোম (স্বাভাবিক বা আক্রান্ত) মায়ের থেকে আসে তাই কন্যার বর্ণান্ধ হওয়ার সম্ভাবনা 50 % হবে।
10. মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগের নাম লেখো।
ANS. মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগ হল হিমোফিলিয়া ও বর্ণান্ধতা।
11. থ্যালাসেমিয়ার বাহক কন্যা স্বাভাবিক পুরুষকে বিবাহ করতে পারে কিনা যুক্তি দাও।
ANS . থ্যালাসেমিয়ার বাহক কন্যা thal+//thal ও স্বাভাবিক পুরুষের thal//thal মধ্যে বিবাহ হলে সন্তান-সন্ততি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই তবে 50% সন্তান-সন্ততি স্বাভাবিক কিন্তু বাহক হবেন।
12. বর্ণান্ধতার কীভাবে বংশগত সঞ্চারণ ঘটে তা একটি ক্রসের সাহায্যে দেখাও।
ANS. একজন স্বাভাবিক বাহক মাতা (Xc+ Xc) এবং একজন স্বাভাবিক পিতার (Xc+ Y) পুত্র-কন্যার কীরূপ হতে পারে নীচে ছকের সাহায্যে দেখানো হল-
>সিদ্ধান্ত : মোট চারটি অপত্য উৎপন্ন হলে তাদের 50% কন্যা ও 50% পুত্র হবে। কন্যাদের মধ্যে 50% স্বাভাবিক ও 50% বাহক হবে এবং পুত্রদের মধ্যে 50% স্বাভাবিক ও 50% বর্ণান্ধ হবে।
13. থ্যালাসেমিয়া রোগের ফলে শরীরে রক্তাল্পতা দেখা যায় কেন?
ANS. হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের ত্রুটিজনিত কারণে থ্যালাসেমিয়া রোগের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন প্রকার মিউটেশন জনিত কারণে alpha এবং Beta গ্লোবিন জিনের উৎপাদন হয় না বা কম হয়, তার ফলে হিমোগ্লোবিনের গঠন ত্রুটিযুক্ত হয় এবং লোহিতকণিকা দ্রুত ভেঙে যায় লোহিতকণিকার আয়ু 120 দিনের পরিবর্তে 50-60 দিন হয়। লোহিতকণিকা ভেঙে হিমোগ্লোবিন নির্গত হওয়ার ফলে তীব্র রক্তাল্পতা দেখা যায়। একে হিমোলাইটিক রক্তাল্পতা বলে।
14. থ্যালাসেমিয়া রোগে বারবার রক্ত দিতে হয় কেন? এবং এর ফলে কী ক্ষতি হয়?
ANS. থ্যালাসেমিয়া রোগে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, ফলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বারবার রক্ত দিতে হয়। বারবার রক্ত দেওয়ার
ফলে দেহে লৌহের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, ফলে হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষতি হয়।
15. থ্যালাসেমিয়া রোগের জেনেটিক কাউন্সেলিং বলতে কী বোঝো?
ANS . থ্যালাসেমিয়া অটোজোম বাহিত জিনগত রোগ। এই রোগে রোগী মারাত্মক রক্তাল্পতায় ভোগে এবং মারা যায়। দুটি পরিবারের বিবাহের পূর্বে রক্ত পরীক্ষা করে তাদের বংশে থ্যালাসেমিয়া আছে কিনা-তা জানা দরকার। যদি উভয় পরিবারের সদস্যদের মাইনর থ্যালাসেমিয়া থাকে তাহলে তাদের সন্তান-সন্ততিতে থ্যালাসেমিয়া দেখা দিতে পারে তাই ওই দুটি পরিবারের মধ্যে বিবাহ হওয়া উচিত নয়। এই ধরনের উপদেশমূলক পরামর্শকে জেনেটিক কাউন্সেলিং বলে।
16. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুত্রসন্তানরা হিমোফিলিক হয়—ব্যাখ্যা করো।
অথবা, লিঙ্গ সংযোজিত বা X ক্রোমোজোমবাহিত রোগ
পুরুষের দেহে বেশি দেখা যায় কেন?
হিমোফিলিয়া রোগে মহিলাদের চেয়ে পুরুষেরা বেশি আক্রান্ত হয় কেন?
ANS. লিঙ্গ সংযোজিত বা X ক্রোমোজোম বাহিত রোগের জন্য দায়ী জিনটি
প্রচ্ছন্ন ধর্মী। পুরুষের সেক্স ক্রোমোজোম X এবং Y। পুরুষের X ক্রোমোজোমে একটি লিঙ্গ সংযোজিত রোগের জিন, যেমন— বর্ণান্ধতা বা হিমোফিলিয় রোগের জিন উপস্থিত থাকলেই পুরুষের মধ্যে রোগের প্রকাশ ঘটে কিন্তু মহিলাদের সেক্স ক্রোমোজোম X এবং X অর্থাৎ এই রোগের জন্য দায়ী প্রচ্ছন্নধর্মী জিনটি একমাত্র হোমোজাইগাস অবস্থায় থাকলে, তবেই রোগের প্রকাশ ঘটবে এই কারণে X ক্রোমোজোম বাহিত রোগ পুরুষের দেহে বেশি প্রকাশ পায়।
17. অটোজোমাল বংশগত রোগের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
ANS. (i) অটোজোমাল বংশগত রোগ স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রকাশিত হয়। (ii) অটোজোমাল বংশগত রোগের প্রকাশ সব
প্রজন্মে নাও থাকতে পারে। অটোজোমাল প্রচ্ছন্ন বংশগত রোগ যদি P জনুতে দেখা যায়, তাহলে F1 জনুতে রোগ লক্ষণ প্রকাশ না পেয়ে F2 জনুতে প্রকাশিত হতে পারে। যেমন— টাকপড়া, থ্যালাসেমিয়া ।
18. সেক্স ক্রোমোজোমাল বংশগত রোগের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
ANS. (i) সাধারণত স্ত্রীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে রোগের লক্ষণ বেশি প্রকাশ পায়।
(ii) পিতার কোনো X ক্রোমোজোমস্থিত রোগগ্রস্ত জিন কেবলমাত্র তার কন্যার মধ্যে এবং মাতার দেহ থেকে পুত্রের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। যেমন—বর্ণান্ধতা, হিমোফিলিয়া।
19. লিঙ্গ নির্ধারণে পিতার ভূমিকা প্রধান ব্যাখ্যা কর।
ANS. পুত্র ও কন্যা সন্তান সৃষ্টি হওয়ার পিছনে পিতার ভূমিকাই প্রধান। কারণ পিতার সেক্স ক্রোমোজোম X ও Y প্রকারের। যেহেতু মাতার সেক্স ক্রোমোজোম XX প্রকারের, তাই তাদের একধরনের গ্যামেট X তৈরি হয়। অপরপক্ষে, পিতার দু-ধরনের গ্যামেট X ও Y তৈরি হয়। যখন পিতার X গ্যামেট মাতার X গ্যামেটের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন কন্যাসন্তান (XX) সৃষ্টি হয়। আবার পিতার Y গ্যামেট যখন মাতার X গ্যামেটের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন পুত্রসন্তান (XY) সৃষ্টি হয়। অতএব সহজেই বলা যায় যে, পুত্র ও কন্যা সন্তান সৃষ্টিতে পিতার ভূমিকাই প্রধান।
READ MORE..CLICK THE LINK
Post a Comment